Header Ads

Header ADS

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা ২২ এপ্রিল : আপনি তৈরি তো?

আগামী ২২ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগ পরীক্ষা। কেমন হবে শেষ সময়ের প্রস্তুতি, ভালো করার কৌশল? নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে জানাচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক হোসেন

অন্যান্য বছর প্রিলিমিনারি আর লিখিত পরীক্ষা একই দিনে হলেও এ বছর প্রথমে হবে প্রিলি। বাছাইকৃতদের নিয়ে হবে লিখিত পরীক্ষা। তারপর ভাইভা। প্রিলিতে পাস না করলে লিখিত পরীক্ষার সুযোগ থাকছে না, তাই এ পরীক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিগত সালের প্রশ্ন বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় বাংলায় ২০, সাধারণ জ্ঞানে ২০, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তিতে ১০, ইংরেজিতে ২০ ও গণিতে ৩০ নম্বর বরাদ্দ থাকে। ১ ঘণ্টায় ১০০ নম্বরের মোট ১০০টি এমসিকিউ প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য কাটা হয় ০.২৫ নম্বর। হাতে একদম সময় নেই। এ সময়টাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে লক্ষ্যে পৌঁছানো খুব কঠিন হবে না।

এখন যা করবেন

► বিগত বছরের বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক পদের নিয়োগ পরীক্ষার সব প্রশ্ন সমাধান করে ফেলুন। প্রতিটি প্রশ্ন সমাধান করুন বুঝে বুঝে।
► প্রতিদিন বিগত সালের বিভিন্ন ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষার সাত-আট সেট প্রশ্ন সমাধান করতে থাকুন। এ ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বছরগুলোর প্রশ্নে বেশি গুরুত্ব দিন।
► প্রতিদিন কমপক্ষে ১২ ঘণ্টা পড়াশোনা চালিয়ে যান। কোনো দিন ২ ঘণ্টা কম পড়লে পরের দিন তা পুষিয়ে নিন। মাত্র তো কয়টা দিন।
► বাংলা অংশে কম সময়ে ভালো করার জন্য বিসিএস ডাইজেস্ট/স্পেশাল সংখ্যার (এখানে শুধু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলো সংক্ষিপ্ত আকারে পাবেন) বাংলা অংশ খুব ভালোমতো পড়ে ফেলুন। নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ভাষার ব্যাকরণ বই থেকে ব্যাকরণ অংশটুকু পড়ে ফেলুন।
► ইংরেজির জন্য ডাইজেস্ট/স্পেশাল সংখ্যার ইংরেজি অংশ ছাড়াও এনালজি অংশের জন্য সাইফুরসের এনালজি, Vocabulary, Fill in the blanks, Critical Reasoning এবং গণিতের জন্য আইবিএ-এমবিএর প্রশ্ন-সমাধান বইয়ের সাহায্য নিতে পারেন। শেষ সময়ে ভোকাবুলারির জন্য বিগত সালের পরীক্ষায় আসা শব্দার্থের ওপর বেশি নজর দিন। নতুন কিছু শেখার পরিবর্তে আগের শেখা শব্দার্থ ও গ্রামারের রিভিশনে বেশি গুরুত্ব দিন।
► সাধারণ জ্ঞান অংশে ভালো করতে কমপক্ষে বিগত ছয় মাসের সাধারণ জ্ঞানের মাসিক পরিক্রমার সাম্প্রতিক অংশটুকু পড়ে ফেলুন। সাধারণ জ্ঞানে সাম্প্রতিক বিষয়াবলি থেকে বেশি প্রশ্ন হয়। প্রতিদিন পড়ুন দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকীয়, অর্থ-বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক পাতা। শুধু পড়ার জন্য না পড়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে সংবাদপত্র পড়ুন।
► অন্যান্য অংশের তুলনায় গণিতে নম্বরের পার্থক্যটা হয় একটু বেশি। গণিতে বেশি সময় দিলে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ ঘণ্টা গণিত অনুশীলন করুন। পরীক্ষার হলে ক্যালকুলেটর ব্যবহার নিষিদ্ধ। তাই ক্যালকুলেটর ছাড়াই গণিতের সমাধান করার প্রাকটিস করুন।
► গণিতে হুবহু কমন না পড়লেও একই নিয়মের পুনরাবৃত্তি ঘটে। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি প্রশ্ন এমনভাবে সমাধান করুন, যেন নিয়মের পুনরাবৃত্তি ঘটলে তা বুঝতে কোনো সমস্যা না হয়। উপপাদ্য আর পরিমিতির সূত্র মুখস্থ করে ফেলুন ও অনুশীলন করুন।
► গণিতের Aptitude Test -এ পূর্ণ নম্বর পেতে যেকোনো একটি গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা বইয়ের চিত্রভিত্তিক অধ্যায়, ধারা ও সম্পর্ক (Series and Sequence), গাণিতিক বিচারশক্তি (Mathematical Reasoning) অধ্যায়গুলোর ওপর আলাদা নজর দিন।
► কম্পিউটার অংশে ভালো করার জন্য ডাইজেস্ট/স্পেশাল সংখ্যার কম্পিউটার অংশ ভালোভাবে পড়ে ফেলুন। এ ছাড়া বাজারের একটি কম্পিউটার বই থেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ পড়ে নিন।

পরীক্ষার হলে করণীয়
► প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ১ ঘণ্টায় ১০০টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। সেই হিসেবে প্রতিটি প্রশ্নের জন্য সময় পাবেন মাত্র ৩৬ সেকেন্ড। এ ক্ষেত্রে যে অংশে সময় কম লাগে যেমন—বাংলা, সাধারণ জ্ঞান, কম্পিউটার দ্রুত শেষ করে সময় বাঁচিয়ে অন্য অংশে (যেমন—ইংরেজি, গণিত) কাজে লাগাতে হবে।
► প্রশ্ন কঠিন বা সহজ যেকোনো ধরনের হতে পারে। সহজ হলে বেশি উল্লসিত না হয়ে কিংবা কঠিন হলে ঘাবড়ে না গিয়ে পরীক্ষার সময়টুকু সঠিকভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন।
► পরীক্ষার হলে কারো সাহায্য নেওয়ার চেষ্টা করতে যাবেন না। এতে নিজের আত্মবিশ্বাস কমে যেতে পারে আর যার কাছ থেকে সাহায্য নেবেন তিনি যে আপনাকে সঠিক তথ্য দেবে তারও তো কোনো নিশ্চয়তা নেই। ‘আমি পারব’ এই আত্মবিশ্বাস রাখুন।
► গণিত বাদে অবশিষ্ট ৭০টি প্রশ্নের (যেগুলো পারেন) উত্তর করার চেষ্টা করুন ৩০ মিনিটেরও কম সময়ে। বাকি সময় রাখুন গণিতের জন্য, আমি এমনটিই করেছিলাম।
► প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা হবে। তাই কনফিউজড প্রশ্নগুলোর উত্তর না করাই বুদ্ধিমানের কাজ। মনে রাখবেন প্রশ্ন কঠিন হলে তা সবার জন্যই কঠিন। আপনার সঠিক উত্তর খুব কম হবে ভেবে সব প্রশ্নের উত্তর করতে যাবেন না।
► প্রিলিমিনারি পরীক্ষার কোনো নির্ধারিত কাট মার্কস নেই। প্রশ্ন সহজ হলে কাট মার্কস বেড়ে যায়, কঠিন হলে কমে আসে। এ কথা চিন্তা না করে পরীক্ষায় সময়টুকু ভালোভাবে কাজে লাগান। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ফার্স্ট হওয়ার চেয়ে কাট মার্কস পেয়ে পাস করাটা বেশি জরুরি।
Powered by Blogger.