Header Ads

Header ADS

চাকরিতে পদোন্নতি পেতে করণীয়

আজওয়াদ উৎস।। 
আপনার বসের চাহিদা মাফিক আপনাকে কাজ করতে হবে আর এটাই উচিত। জানতে হবে আপনার কাছে তার চাহিদা কী বা কী করলে প্রতিষ্ঠান আরও উন্নত হতে পারবে, হতে পারবে লাভবান। প্রতিষ্ঠান নিয়ে আপনার উচ্চাকাক্সক্ষার প্রমাণ দিতে হবে। প্রমাণ করতে হবে প্রতিষ্ঠান নিয়ে আপনার সৎ পরিকল্পনার কথা-

চাকরি করছেন একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে। দিনদিন একই কাজ। একই রুটিন। কর্মক্ষেত্রে নিজের সাফল্যটাকে আরেকটু ঝালিয়ে নিতে চায় সবাই। সেজন্য দরকার নতুন চ্যালেঞ্জ। প্রমোশন। পদোন্নতি। এটি যেমন নিজের কাজের স্বীকৃতি, তেমনি কাজের অনুপ্রেরণাও বটে। সঠিক সময়ে চাহিদা অনুযায়ী পদোন্নতি একজন কর্মীর কর্মস্পৃহাকেই বাড়িয়ে তোলে। কিন্তু ভালো কাজ করলেই কি মিলবে প্রমোশন? অনেক ক্ষেত্রেই তা মেলে না। তাই প্রমোশনের জন্য দরকার হয়ে পড়ে বাড়তি কিছু।

প্রথমে সিদ্ধান্ত
চাকরি ক্ষেত্রে প্রমোশন কিংবা ব্যবসায় উন্নতির ক্ষেত্রে আনুষাঙ্গিক বাধা বিপত্তিকে টপকাতে হবে। এতে কোনো কিছু চিন্তা করারই অবকাশ নেই। আর আর্থিক উন্নতি প্রমোশনের ক্ষেত্রে সততা সহিষ্ণুতা থাকাটা জরুরি। হতে হবে সুযোগ সন্ধানীও। সুযোগ বারবার আসে না। তাই সুযোগ আসা মাত্র তা গ্রহণ করতে হবে। সফলতা পেতে হলে আপনি কী করতে চান, কী করলে আপনি সফলতা পেতে পারেন, কোন কাজটি আপনি করতে পারবেন এসব প্রশ্নের উত্তর বের করেই শুরু করতে হবে লক্ষ্যে পৌঁছবার লড়াই। এসব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চিন্তা-ধারাই আপনাকে সাফল্যের উচ্চ শিখরে নিয়ে যাবে।
আপনি যে কাজ করবেন সে সিদ্ধান্তটা নেয়া হয়েছে। আপনাকে এবার আরও কিছু বিষয় বিবেচনা করতে হবে। যেমন আপনি যা করছেন তা কি পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাবে? কাজটি কি আপনার ক্যারিয়ার গড়তে যথেষ্ট উপযোগী? এই প্রশ্নগুলোর যথোপযুক্ত জবাব বের করেই আপনাকে কাজে হাত দিতে হবে। অন্যথায়, মিলবে না সাফল্য কাজের ক্ষেত্রে।

প্রতিষ্ঠানে একনিষ্ঠ
আপনার বসের চাহিদা মাফিক আপনাকে কাজ করতে হবে আর এটাই উচিত। জানতে হবে আপনার কাছে তার চাহিদা কী বা কী করলে প্রতিষ্ঠান আরও উন্নত হতে পারবে, হতে পারবে লাভবান। প্রতিষ্ঠান নিয়ে আপনার উচ্চাকাক্সক্ষার প্রমাণ দিতে হবে। প্রমাণ করতে হবে প্রতিষ্ঠান নিয়ে আপনার সৎ পরিকল্পনার কথা। আপনার সৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সময় সবাইকে সম্পৃক্ত করতে হবে। আপনার প্রতিষ্ঠান আপনার সাফল্য সম্পর্কে জানবে; জানবে আপনার দক্ষতা, কর্মক্ষমতা, কর্মস্পৃহা, সততা ইত্যাদি সম্পর্কেও। এরপরও বাচনভঙ্গি, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি তো আছেই। তারপরই না পদোন্নতির প্রশ্ন। তাছাড়া কাজের মাপকাঠিতে মাপার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান আপনাকে বিভিন্ন প্রকার সাময়িক কাজ দেবে। সেই কাজে দক্ষতা প্রমাণ করতে পারলেই পাওয়া যাবে প্রমোশন। এরপর যদি নতুন অবস্থানে আপনার সমর্থ প্রমাণ করতে পারেন, তখনই কেবলমাত্র আপনাকে নতুন অবস্থানের জন্য স্থায়ীভাবে বহাল করবে। নতুন অবস্থানে আসার পর আপনাকে আপনার নিজের কাজকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। মনে মনে স্থির করতে হবে আপনি আপনার বর্তমান অবস্থানে সর্বোচ্চ সাফল্য দেখাতে পারবেন। নিজেকে বলতে হবে, ‘হ্যা! আমি পারব

অনেকের ধারণা সকাল-সন্ধ্যা কাজ করলেই প্রমোশন পাওয়া যাবে। কিন্তু এই ধারণাটা ভুল। সকাল-সন্ধ্যা কাজ করলেই প্রমোশন পাওয়া যাবে না। প্রমোশন পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই কর্মদক্ষতা, বিচক্ষণতা, কর্মস্পৃহা, উন্নত ধারণা, নতুন নতুন কাজ করার মতো সাহস থাকতে হবে যা আপনার ঊর্ধ্বতনের নজর কাড়বে। আর এই কাজগুলো আপনাকে এনে দেবে সফলতা, পাইয়ে দিবে প্রমোশন। তাছাড়া ঊর্ধ্বতন যেভাবে চায়, তার পুরোটাই দিতে পারলে ভালো। ছাড়া প্রমোশনের ক্ষেত্রে আরও একটি জরুরি বিষয় হল বর্তমান কাজের বাইরেও অন্যান্য কাজে দক্ষতা প্রদর্শন। এটা করতে পারলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সহজেই খুশি রাখতে পারবেন।

আগ্রহী হবে ঊর্ধ্বতন
আপনার উচিত ঊর্ধ্বতনকে নতুন নতুন পরিকল্পনার কথা জানানো। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যখন ব্যস্ত থাকে তখন অবশ্য এই কাজ করা ঠিক নয়। একটি ভালো সময় বিচার করেই আপনাকে কাজটি করতে হবে। সময়টা হতে পারে লাঞ্চের সময় কিংবা অফিস শেষে অথবা কোনো আনন্দঘন মুহূর্তে। মনে করুন আপনার প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কোনো ওয়েবসাইট নেই। আপনার প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য আপনি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতনকে আহ্বান করলেন। তাছাড়া ওয়েবসাইটটি তৈরি করতেও আপনি সাহায্য করলেন। এতে আপনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আপনার প্রতি খুশি থাকবে। কারণ ওয়েবসাইটটিতে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্রকার বিজ্ঞাপনসহ সব ধরনের তথ্য সরবরাহ করবে। এমন সব নিত্যনতুন ধারণা তৈরি করলে আপনার প্রতিষ্ঠানটি অবশ্যই লাভবান হবে। আর প্রতিষ্ঠান লাভবান হলে আপনার প্রমোশনও অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যাবে।

দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভুল?
আপনার নতুন অবস্থানে অফিস আপনাকে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে কি? তাছাড়া পদোন্নতি হয়ে আপনি এখন যে অবস্থানে আছেন তা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য কিনা, কিংবা আপনার ঊর্ধ্বতনরা আপনাকে কীভাবে গ্রহণ করছে বা আপনার পূর্বের অবস্থানের শূন্যস্থান পূরণ করতে অফিস কোনো উদ্যোগ নিয়েছে কিনা এসব প্রশ্নের জবান নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। পদোন্নতির পর সাধারণত শুরুতে নড়বড়ে অবস্থায় থাকে। আসলে আপনি নতুন কাজটি ঠিকভাবে করতে পারবেন কিনা এই বিষয়ে আপনার প্রতিষ্ঠানটির কিছু দ্বিধা থাকে। ঊর্ধ্বতনকে বুঝাতে হবে যে কোনো কাজের জন্য আপনি উপযুক্ত আর নতুন এই অবস্থানে আপনি আপনার সর্বোচ্চ কর্মদক্ষতা প্রমাণ করতে সক্ষম।

মনে করুন, প্রথমে আপনি একটি ব্যবসার ধারণা দিলেন। প্রতিষ্ঠান তা গ্রহণও করল কিন্তু ধারণাটি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হল না। ফলে দেখা গেল পরবর্তী কাজের ক্ষেত্রে আপনার ধারণা বাস্তবায়নের পিছনে প্রতিষ্ঠান খুব বেশি আগ্রহী হতে চাইবে না বা বড় অংকের ঝুঁকি নিতে চাইবে না। সেক্ষেত্রে আপনাকে ভেঙে পড়লে চলবে না। আবার কিছু নতুন ধারণা বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠানকে প্রেষণা যোগাতে হবে। প্রতিষ্ঠান যদি আপনার এই নতুন ধারণা বাস্তবায়নের পর সফলতা পায়, তবে পরবর্তী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেই প্রতিষ্ঠানটি আবার হারানো আগ্রহ ফিরে পাবে। তাই আপনার উচিত নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাওয়া, কাজের সঙ্গে নাছোড়বান্দার মতো লেগে থাকা। কোনো কাজে সফলতা না পেলেই যে ভাববেন আমি অদক্ষ, এটা মোটেও ঠিক নয়। যে কাজে আপনি ব্যর্থ হয়েছেন একবার, সে কাজটিই শতবার সফলতা এনে দিতে পারে আপনাকে, প্রমাণ করবে কর্মক্ষমতা কর্মদক্ষতা। তার জন্য চাই মনোবল অদম্য স্পৃহা।

সূত্র: চাকরির খোঁজ
Powered by Blogger.